দীর্ঘ অক্ষমতা মার্জনা করো || আনোয়ার কামাল
দীর্ঘ অক্ষমতা মার্জনা করো || আনোয়ার কামাল

.

প্রথমেই পিতা আমার কনিষ্ঠ আঙুল ধরে দাঁড় করালেন

আমার মেরুদণ্ডের কশেরুকা ধীরে ধীরে পোক্ত হতে থাকলো

অতঃপর আমি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পিতার পিছু পিছু হাঁটা শিখলাম।

পিতা তুমি আমাকে দাঁড়াতে শেখালে, হাঁটা শেখালে আর

মাথা উঁচু করে আকাশ স্পর্শ করার সাহস যোগালে!

আমি দ্রুত সবই রপ্ত করলাম---

তোমার অনুসৃত পথে আমার হাঁটা-চলা, বেড়ে ওঠা।

.

হঠাৎ একদিন কাল বোশেখির ঝড়ে দানবের থাবায় সব ছিন্ন ভিন্ন হলো

আকাশ মাটিতে চুমু দিয়ে চলে গেল। সবুজ পদচিহ্ন টকটকে লালে লা হলো

আমাদের দেহাবশেষ ব্যবচ্ছেদ করা হলো! কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেয়া হলো!

তোমার সন্তানদের নির্বিচারে হত্যা করা হলো---

চরম অশ্রদ্ধায় দানবীয় কাপুরুষরা তোমাকে পদদলিত করে চলে গেল!

.

অতঃপর তোমার মুখচ্ছবি কালো কাপড়ে আচ্ছাদিত করা হলো

তোমার সন্তানরা ডুকরে কেঁদে উঠলেও পাষাণ হৃদয়ে মমতা জাগেনি

উল্লাসে নেচেছে আর পৈশাচিক উন্মত্ততা দেখিয়েছে। জন্মোৎসবের নামে

রঙিন ফানুসে আতশবাজি করেছে।

.

অতঃপর নরাধমরা যারা হুঙ্কার করে আকাশ কাঁপাতে চেয়েছিল,

বাতাসে মিলিয়ে যেতে চেয়েছিল--- তারা ঠিকঠিক আবার ভূতলে পতিত হলো।

বিচার হলো। ন্যায় বিচার।

.

অতঃপর আমরা আমাদের দায়ভার থেকে দায়মুক্ত হলাম।

অপরাধবোধ কিঞ্চিত হালকা হলো। পিতা তোমাকে হত্যা---

এ কোন নিছক হত্যাকা- নয়--- এ যেন জাতিকে অস্বীকার করা!

পুরো জাতিকে পেছনমুখে ঠেলে দেয়া।

পিতা অতঃপর তোমার হন্তারকদের সাজা হয়েছে

আমরা তাদের ক্ষমা করিনি

.

পিতা তুমি আমাদের এ দীর্ঘ অক্ষমতার জন্য মার্জনা করো।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান